শীতে সর্দি কাশি থেকে দূরে থাকার উপায়
শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায়প্রথম আমাদের বিশ্রাম আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আমাদের রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে বিশ্রাম আমাদের অনেক ভূমিকা রাখে বা আপনি ফ্লো থেকে বাঁচতে চাইলে অবশ্যই আপনাদের ঘুমের প্রয়োজন। যদি আপনি নিয়মিত সঠিকভাবে বিশ্রাম নিয়ে থাকেন তাহলে ফ্লো কখন হয় হবে না।
![]() |
শীতে সর্দি কাশি থেকে দূরে থাকার উপায় |
দ্বিতীয়ত তরল জাতীয় খাবার নাক, গলা বা মুখে আদ্রতা দূর রাখতে তরল জাতীয় খাবার প্রচুর ভূমিকা রাখে। তাই প্রচুর পরিমাণে পানি খাবেন বা তরল জাতীয় খাবার আপনি বেশি বেশি করে খাবেন তাহলে নাক, মুখ ও গলার আদ্রতা বজায় রাখবে। আপনি প্রতি নিয়মিত সকল করে হারবাল চা খাইতে পারেন রসুন, হলুদ, আদা এগুলাতে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল রয়েছে যা আপনার শরীরের জন্য খুব উপকার।
ভূমিকা
আজকে আমরা জানবো শীতে ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিভাবে আপনি সর্দি কাশি থেকে দূরে থাকবেন। এই শীত আসলে অনেকেরই সর্দি কাশি বা জ্বর দেখা দিয়ে থাকে, তাই আপনি শীতে কিভাবে সর্দি কাশি থেকে দূরে থাকবে তা নিয়ে আজকে আমরা আলোচনা করব। যেসব পদ্ধতি নিয়ে আমরা আপনাকে জানাবো, সেসব পদ্ধতি যদি আপনারা সঠিক ভাব মেনে চলেন তাহলে আপনারা একদম সুস্থ থাকবেন এবং সর্দি কাশি ও জ্বর আপনাকে কখনো আক্রান্ত করবে না।
এই শীতে সর্দি কাশি থেকে যেভাবে দূরে থাকবেন
শীতকালে সবারই কম-বেশি ঠান্ডা লেগে থাকে। কারণ শরীরের তাপমাত্রার চেয়ে জলবায়ু তাপমাত্র অনেক কম থাকে যার জন্য আমরা ঠান্ডা অনুভূতি করি। যার ফলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এই সময় ঠান্ডা লাগা, সর্দি কাশি, গলা ব্যথা সহ আরো অনেক ধরনের রোগ বৃদ্ধি পায়। এই সময়টা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে এবং জীবাণু ব্যর্থ থাকে যেমনঃ ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাল, ফাঙ্গাস ইত্যাদি বংশবিস্তার দ্রুত ঘটে।
শীতের মৌসুমে আমাদের নিয়মিত হাত ধুতে হবে। শীতের আবহাওয়ার জন্য আমরা কম পানি পান করি কিন্তু এই সময় আমাদের শরীরের অনেক ভূমিকা রাখে। পানি আমাদের শরীর থেকে টক্সিন বাহির করতে সাহায্য করে এবং অসুস্থ হওয়ার থেকে বিরত রাখে। শীতকাল অন্তত সারা দিনে ২ লিটার পানি পান করা উচিত। বিশেষ করে এই সময় আমরা তরল জাতীয় খাবার খাইতে পারি।
যেসব খাবার সর্দি-কাশি প্রতিরোধ করবে
যেসব খাবার আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা করতে সাহায্য করে সেসব খাওয়া আমাদের প্রয়োজন। এসব খাবার খেয়ে আমাদের শরীর সুস্থ থাকবে এবং যেগুলো খাবার খেয়ে সর্দি-কাশি থেকে দূরে থাকা যাবে সেগুলো জেনে নিন।
- মধুঃ মধু আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এতে আন্টি ব্যাকটেরিয়াল যৌগ থাকে এবং প্রাচীনকাল থেকে এটি ব্যবহৃত হয়। ভারতের পুষ্টিবিদ ডা. অর্চনা বাত্রা বলছেন, মধু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে এবং শরীরকে হাইড্রেট করতে ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও এটি কাশি দূর করতে এবং কাশিতে গলা ব্যাথা সমস্যা দূর করতে অনেক ভালো কাজ করে।
- রসুনঃ প্রাচীনকাল থেকে ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হয় আসার ওষুধ অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং আন্টি-ফাংগাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি মেডিকেল প্রমাণিত যে, রসুন খাওয়ার ফলে সম্ভাবনা কমে যায় এবং শরীরকে সুস্থ রাখে। রসুন আমরা নিয়মিত খেলে শরীর অসুস্থ থাকে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
- আদাঃ আরেকটি প্রাকৃতিক উপাদান ওষুধের মতন কাজ করে এবং এটি আন্টি মাইক্রোবিয়াল ও ক্যান্সার বিরোধী ভূমিকা রাখে। কাঁচা আদা গরম স্যুপের বা চায়ের সঙ্গে খেলে তা সর্দি-কাশি দূর করতে অনেক ভালো কাজ করে। এ ছাড়া আদা বিভিন্ন ধরনের সংক্রামন এড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
- কলাঃ কলা একটি নন-আসিডিক খাবার, যা গলা খুসখুসে ভাব কমাতে বিশেষ ভাবে কার্যকরী। এছাড়াও কলা একটি লো-গ্লায়সেমিক খাবার, যা ঠান্ডা-সর্দি ভাব কমায়।
- সিদ্ধ গাজরঃ গাজরকে বলা হয় সুপার ফুড। গাজরের ভিটামিন ও মিনারেলস দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। স্বভাবিক কারণেই চট করে সর্দি-কাশির মতো রোগগুলো ধরে না। তবে ঠান্ডা লাগলে কাঁচা গাজর না খেয়ে সেদ্ধ করেই খাওয়া উচিত।
- ডিমের সাদা অংশঃ ঠান্ডা লেগে গলা ব্যাথা হয় একটি স্বাভাবিক ঘটনা। এই সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে ডিমের সাদা অংশ। কারণ ডিমের সাদা অংশ গলার ভিতরে গ্ল্যান্ড ফুলে যাওয়া ঘুমায় এবং সংক্রামন দূর করে।
- চিকেন সুপঃ এটি হজম হয় সহজে এবং সকল প্রয়োজনীয় খনি, ভিটামিন, প্রোটিন ও ক্যালোরি দিয়ে পরিপূর্ণ। সর্দি ও খুসখুসে কাশি কমাতে গরম পানীয় ব্যবহার প্রাচীনকাল থেকে হয়ে আসছে। এই তালিকার মধ্যে পড়ে চিকেন স্যুপও। কারণ চিকেন শুপে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং আন্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা গলা খুস খুসের জন্য দেয় ভাইরাস এবং মিউকাস কমায়।
- সবুজ শাকসবজিঃ সবুজ শাকসবজি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। শাকসবজিতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিভিন্ন রোগ নিরাময় সহযোগিতা করে। বাত্রা বলেন, সবুজ শাকসবজি শরীরের ক্যালরি পড়াতে এবং সাধারণ ঠান্ডা নিরাময় সহায়তা করে।
- দইঃ দই রয়েছে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন, মিনারেল, প্রোটিন এবং উপকারী প্রোবায়োটিক্স ভরপুর থাকে। আর এ কারণে এটা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ঠান্ডায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমায়। তাই দই আমাদের শরীরের অনেক ভূমিকা পালন করে।
- লেব ও মধুর মিশ্রণঃ সমপরিমাণ লেবুর রসের মদন মিশ্রণ গলার ভিতরে সংক্রমণ কমায়। সেজন্য আমাদের প্রতিদিন সকালে এক ধরনের রস তৈরি হবে সেটি আমাদের পান করতে হবে যাতে আমাদের শরীর সুস্থ থাকে।
সর্দি-কাশি সারাবে যেসব ফল খেলে
শীতের এই মৌসুমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা স্বাভাবিকের তুলনায় খানিক কমে যায়। তাই শরীরে ভিটামিন সি, ফাইবার ইত্যাদি প্রয়োজনীয় কিছু উপাদানের যোগান দিতে শীতকালে বেশি করে খেতে হবে টক জাতীয় ফল। কোন ফল গুলো খেতে হবে সেগুলো জেনে নিন;-
- আপেলঃ এই ফলের রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ভিটামিন ই, কপার, পটাশিয়াম ইত্যাদি একাধিক ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে। আপেলের মধ্যে কুয়েরসেটিন নামক এক ধরনের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে, যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলে এবং আমাদের শরীর ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- কমলালেবুঃ কমলালেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়াম। বিটা ক্যারোটিন ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ কমলালেবু সর্দি-কাশি সারায় এবং হজম শক্তি বাড়ায়।
- জলপাইঃ জলপাইনে ভিটামিন ই ও ভিটামিন সি। এটি বাতের ব্যথা, হাঁপানি উপশমে জলপাই অনেক কার্যকরী উপাদান।
- আমলকিঃ আমলকিতে রয়েছে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। আমলকি খেলে দাঁত, চুল, ত্বকের জন্য অনেক ভালো। এটি আমাদের রক্তাল্পতা দূর করতে অনেক ভূমিকা রাখে।
- তেতুলঃ তেতুল আমাদের শরীরে অ্যালার্জি হতে বাধা দেয়। এতে ভিটামিন সি থাকে, যার শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতে সহায়তা করে।
- আমড়াঃ আমড়াতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের আন্টি অক্সিডেন্ট যেমন ভিটামিন, মিনারেল ও ফাইটোকেমিক্যাল থাকে। আরে উপাদানগুলো আপনার শরীরে সিস্টেমের কারণে সহায়তা করে স্ট্রেসের প্রভাব কমাতে সাহায্য করে।
- বিলিম্বিঃ বিলিম্বি ফলটি আমাদের খুবই কম পরিচিত। এটি দেখতে ছোট কিন্তু লম্বা আকারের এবং দেখতে খুবই সুন্দর। সর্দি কাশি নিরাময়ে বিলিম্বি ফুল ভালো কাজ করে। গরম পানির সঙ্গে এটিকে জাল দিতে হবে এবং এই পানি নিয়মিত সেবন করলে সর্দি কাশি ভালো হয়ে যায়। বিলিম্বি গাছের ফল নিয়মিত খেলে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- কুলঃ ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট সমৃদ্ধ কুল হজনের জন্য খুবই ভালো। ফুল আছে ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামসহ নানা প্রয়োজনীয় উপাদান। যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই কার্যকরী।
লেখকের মতামত
প্রিয় পাঠক, উপরের আলোচ্য বিষয় আমাদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। যেটা আমাদের শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এই রকম অজানা তথ্য জানার জন্য আমাদের সাথে থাকুন। ধন্যবাদ!
ব্রোক্লিন৬৯ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url