শীতকালে ত্বকের যত্ন কিভাবে করবেন তা জেনে নিন
যে সব খাবার খেলে শীতকালে সুস্থ থাকবেনশীতকালে ত্বকের যত্ন শীতকালে ত্বক স্বাভাবিক রাখতে অবশ্য ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। ময়েশ্চরাইজার ব্যবহারে আমাদের ত্বক মসৃণ থাকে। ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারি।
শীতকালের ত্বক ভালো রাখতে আমরা বেশি বেশি পানি পান করতে পারি। শীতকালে পর্যাপ্ত পানি খেতে ত্বকের কোমলতা ও উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। শীতকালে ত্বকের যত্নে পানি পান করার কোন জুড়ি নেই।
শীতকালের ত্বক নরম ও উজ্জ্বল রাখা
শীতকালের ত্বক নরম ও উজ্জ্বল রাখতে এক চামচ মধুর সাথে এক চামচ টক দই মিশ্রণ করে। মুখে লাগিয়ে নিন। এরপর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এছাড়া একটি টি ব্যাগ নিয়ে চা পাতাটা বের করে নিতে হবে। এতে এক চামচ মধু যোগ করতে হবে। এরপর মুখে লাগিয়ে ধীরে ধীরে ম্যাসাজ করতে হবে। শীতকালে এই ক্লিনজার টি আপনি নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারেন।
শীতকালে ত্বকের যত্নে ক্লিনজার
শীতকালে প্রাকৃতিক ক্লিনজার হিসেবে গোলাপের পেস্ট ও কাঁচা দুধ ত্বকের ব্যবহার করতে পারেন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য দুধের পরিবর্তে টক দই ব্যবহার করতে পারেন। এটি ব্যবহারে ত্বকের কোমলতা বৃদ্ধি পাবে।
শীতকালে কনুইয়ে দাঁত তুলতে যা করণীয়
শীতকালে কনুই কালো ছোপ ছোপ দাগ পরে। সেক্ষেত্রে অলিভ অয়েল লেবু মধু ও চিনি সেই দাগের অংশে লাগিয়ে নিন। ১০ থেকে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন এরপর চার থেকে পাঁচ মিনিট ধরে মাসাজ করুন সপ্তাহে দুইদিন প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন।
শীতকাল এলেই হাত পায়ের চামড়া উঠে?
শীতকাল এলেই হাত পায়ের চামড়া উঠে এটি রোধ করতে। আমাদের তিলের তেল অথবা জলপাইয়ের তেল ,গ্লিসারিন, গোলাপজল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
শীতকালে চুলের যত্ন
শীতকালে আমাদের চুল কমবেশি সবারই রুক্ষ হয়ে যায়। আবার খুশকির সমস্যা দেখা দেয় খুশকি সমস্যা দেখা দিলে নারিকেলের সাথে কিছু পরিমাণ লেবুর রস মিশিয়ে নিন। সপ্তাহে দুইদিন ব্যবহার করুন এতে খুশকির সমস্যা দূর হবে। এছাড়া খুশির সমস্যা দূর করতে টক দই লেবু এ্যলোভেরা নিয়ে একসঙ্গে পেস্ট করে তৈরি করে এবার চুলের গোড়ায় লাগান। ৩০ মিনিট পর ফেলুন। এতে খুশকি চলে যাবে।
যাদের স্বাভাবিক চুল উঠে তাদের জন্য ।ক্যারোটিন প্রোটিন চুল গজাতে সাহায্য করে। ডিম হচ্ছে প্রোটিনের একটি উৎস। ডিমের কুসুম এবং অলিভ অয়েল একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। চুলের গোড়ায় লাগিয়ে রাখুন পনের থেকে বিশ মিনিট তারপর শ্যাম্পু করে ফেলুন সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করুন।
শীতকালের চুল ঝলমলে ও উজ্জ্বল রাখতে মেথির পেস্ট, একটা ডিম ,টক দই একসাথে মিশ্রণ করে লাগাতে পারেন। সপ্তাহে একবার বার ব্যবহার করতে পারেন। চুল ভালো রাখতে মেহেদির কোন বিকল্প নেই। প্রতিমাসে 15 দিন পর পর মেহেদী চুলে লাগাতে পারেন। মেহেদী পাতা চুলকে ঝলমলে ও উজ্জ্বল রাখে। প্রতি তিন মাস পর চুলের আগা কাটলে চুলের আগা ফাটা রোধ হয়। এছাড়াও চুলের যত্নে আমরা প্লাস্টিকের চিরুনির পরিবর্তে কাঠের চিরুনি ব্যবহার করতে পারি।
শীতকালে চুলের যত্নে তেলের ব্যবহার
শীতকালে চুলের যত্নে তেলের কোন বিকল্প নেই। শীতকালে আমাদের মাথার স্ক্যাল্প ড্রাই হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে আমরা সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন মাথায় তেল ব্যবহার করতে পারি। মাথায় তেল দিলে মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। ফলে চুলের গোড়া মজবুত করে তোলে। তেল দেওয়ার পর চুলের শ্যাম্পু করুন। এরপর কন্ডিশনার দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
শীতকালে তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন
শীতকালে তৈলাক্ত ত্বকের জন্য মসুর ডাল মধু, কমলার খোসা গুড়া ,এসব কটি মিশ্রণ একত্র করে মুখে লাগান। ১০ মিনিট অপেক্ষা করে তুলে ফেলুন। এতে আপনার মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর হবে।
চোখের নিচে কালো দাগ দূর করতে করণীয়ঃ
টমেটোর রস এক চা চামচ, লেবুর রস এক চা চামচ সঙ্গে মিশিয়ে চোখের নিচে লাগিয়ে 10 মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এছাড়া ও শসার রস অথবা আলুর রস চোখের নিচে লাগিয়ে চোখের কালো দাগ দূর করা সম্ভব। পরিমিত পানি পান করতে হবে সাত থেকে আট ঘন্টা বিশ্রাম নিতে হবে।
শীতকালে স্বাভাবিক ত্বকের যত্নঃ
শীতকালে স্বাভাবিক ত্বকের জন্য আমরা ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বকের যত্ন নিতে পারি। যেমন মসুর ডাল, কাঁচা হলুদ, বেসন কাঁচা দুধ একসাথে মিশিয়ে এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন। এ প্যাকটি সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করতে পারেন। আর মসুর ডালে আছে প্রোটিন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ডায়েটারি ফাইবার ,ওমেগা থ্রি অ্যাসিড এবং ভিটামিন এ ,সি ,কে আর থায়ামিন। এই ডাল আমাদের ত্বকের ক্ষতিকর উপাদান বাহিরে বের করে আনতে সাহায্য করে।
হলুদ আমাদের ত্বকে নানা সমস্যা দূর করে। হলুদে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ইনফ্লোমেটারি। এই হলুদ প্রাচীনকাল থেকেই রূপচর্চায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। শীতকালে স্বাভাবিক ত্বকের জন্য টমেটো দিয়ে শীতকালে ত্বকের যত্ন করা যায়। টমেটোতে আছে বিটাক্যারোটিন ,ভিটামিন সি এবং লাইকোপিন এই টমেটো ত্বককে উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত করতে সাহায্য করে। ত্বকের মসৃণতা ধরে রাখে। যাদের তৈলাক্ত ত্বক তাদের জন্য টমেটো ভীষণ উপকারী।
কাঁচা টমেটোর রস মুখে লাগিয়ে চার থেকে পাঁচ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন এতে ত্বকের চিটচিটে ভাব দূর হবে ।ত্বক ও ত্বক পরিষ্কার করবে। টমেটোতে থাকা পুষ্টি উপাদান একদিকে ত্বকের পুষ্টির ঘাটতি দূর করে ত্বকে কোলাজেনের (collagen )উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। কোলাজেন থাকার কারণে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেতে সময় লাগে না। স্বাভাবিক ত্বকের জন্য এক চা চামচ টমেটোর রস, চালের গুড়া ও মধু মিশে ব্যবহার করতে পারেন।
এই প্যাকটি সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করুন। টমেটো ত্বকের ন্যাচারাল ব্লিচ হিসেবে কাজ করে।
বিশেষ সতর্কতা, যাদের টমেটো স্কিনে ব্যবহার করলে রাশ বের হয় কিংবা সু্্যট করে না। তারা জোর করে মুখে টমেটো দিবেন না যেন ! ঐ যে এক কথা বারবার বলি সবার স্কিন এক রকম না।
শীতকালে ঠোঁটের যত্ন
শীতের বাতাস বইতে লাগলে ঠোঁটের কোমল তাকে নিষ্প্রাণ করে দেয়। সবার আগে শীতকালে ঠোঁটের যত্নে, শীতকাল শুরু থেকেই ভালো মানের পেট্রোলিয়াম জেলি, নারিকেলের তেল ঠোঁটের চারপাশে লাগাতে পারেন। তাই শীতে চাই ঠোঁটের বাড়তি যত্নআত্তি। ঘরোয়া উপায় বিভিন্ন ধরনের প্যাক বানানো যায়। সেসব প্যআক ব্যবহার করলেও তরতাজা থাকে ঠোঁট। যেমন লেবু ও চিনি একসাথে মিশ্রণ করে ঠোঁটে দুই থেকে তিন মিনিট স্ক্রাব করতে পারেন।
অথবা চিনি ও মধু একসাথে মিশিয়ে দুই থেকে তিন মিনিট স্ক্রাব করতে পারেন। তিলের তেলও ব্যবহার করা যেতে পারে। ঠোঁট নরম রাখতে সুন্দর ও গোলাপি ঠোঁট সবাই চায়। তাই ঠোঁটের রং স্বাভাবিক রাখতে হলে গোলাপ ফুলের পাপড়ি পেটে মধুর সাথে মিশিয়ে রাখুন। কিছুক্ষণ এটি প্রতিদিন ব্যবহারে ঠোঁটের গোলাপি ভাব ফিরে আসবে। ঠোঁটের কালচে ভাব দূর করতে আমন্ড অয়েল ব্যবহার করতে পারেন ।হাত পা ও মুখের যত্নের পাশাপাশি ঠোঁটের যত্ন করা জরুরী ।
শীতকালে হাত ও পায়ের যত্ন
হাত ও পরিষ্কার রাখতে কুসুম গরম পানির সাথে পরিমাণ মতো আপনার পছন্দ অনুযায়ী শ্যাম্পু যোগ করুন। শ্যাম্পুটি গরম পানি সাথে মিশিয়ে নিতে হবে। ১০থেকে১৫ মিনিট হাত পা ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর হাত পা এবং নখ ভালো ব্রাশ দিয়ে ঘষে নিতে হবে। এভাবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে আপনি আপনার হাত ও পায়ের যত্ন নিতে পারেন।
লেখকের মতামত
প্রতিটি মানুষের চাই নিজেকে সুন্দর করে তুলতে। তাই প্রতিদিন বেশি বেশি পানি পান করুন ।প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন। বিশ্রাম নিন ।আশা করি ,উপরোক্ত পোস্ট আপনার ব্যক্তিজীবনে কাজে আসবে।
ব্রোক্লিন৬৯ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url