কোমরের ব্যাথা সারানোর সহজ উপায়
পেটের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া সহজ উপায়কোমরের ব্যথা বা ব্যাক পেইনের সমস্যা বর্তমানে কম বেশি আমাদের সবারই হয়ে থাকে। বিশেষ করে কর্মজীবী এবং গৃহিণী মহিলাদের মধ্যে সব থেকে বেশি দেখা দেয়। যারা সারাদিন কম্পিউটারে সামনে বসে কাজ করেন এবং মহিলারা বাড়ির বিভিন্ন কাজ করে থাকে, তাদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা বেশি দেখা দেয়। কোমরের ব্যথা এমন এক ব্যাথা যা সহজে মুক্তি পেতে চায় না। শুয়ে থাকলে, বসে থাকলে, বিশেষ করে বিশেষ করে কোন কাজ করতে গেলে ব্যথাটা বেশি অনুভব করা যায়।
![]() |
কোমরের ব্যাথা সারানোর সহজ উপায় সম্পর্কে জেনে রাখুন। |
সারাক্ষণ বসে বসে কাজ করা কোমরে ব্যথার অন্যতম একটি কারণ।ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের মতে, ৮০ শতাংশেরও বেশি মানুষ অল্প বয়স থেকে কোমর বা পিঠের ব্যথায় ভোগেন। আমাদের বিভিন্ন কারণে কোমর ব্যাথা হতে পারে। কোমর ব্যথার জন্য প্রায়শই আমাদের স্বাভাবিক জীবনে চলাফেরা করার ব্যাঘাত ঘটায়।
ব্যাক পেইনের সমস্যাকে হালকা ভাবে নেওয়া উচিত না। কারণ কোমর ব্যথা হলে আমরা কোন কাজ ভালো ভাবে করতে পারি না। অনেকে এ ধরনের ব্যথা কমাতে বারবার অনেক গুলো পেইন কিলার খান। তবে পেইন কিলার সাময়িক স্বস্তি দিলেও বারবার এ ব্যথা হতেই থাকবে। আর আমাদের পেইন কিলার কিন্তু কিডনির জন্য অনেক ক্ষতিকারক।
ভূমিকা
পৃথিবীতে খুব কম মানুষই আছে যাদের কোমরের সমস্যা বা আপনার নেই। আমাদের সমাজে বিশেষ করে একটু বয়স্ক ব্যক্তিরা কোমর ব্যথায় বেশি ভোগেন। আবার খুব অল্প বয়সে কোমরের ব্যথা হতে পারে। যাদের বয়স প্রায় ৪০, তাদের মধ্যে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের কোমরের ব্যথায় বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে।
"দ্যা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর স্টাডি অফ পেইন" এর সংজ্ঞাঃ- ব্যথা একটি অপ্রীতিকর অনুভূতি এবং মানসিক অভিজ্ঞতা, চিকিৎসা বিজ্ঞানে রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ব্যথা একটি রোগের উপসর্গ হিসেবে ধরা হয়।
ব্যথা সাধারণত ক্ষণস্থায়ী, যে রোগের কারণে ব্যথা অনুভূত হয় সেই রোগ উপশম হলে ধীরে ধীরে ব্যথা সেরে যায়। কিন্তু কিছু কিছু সময় এর অবস্থানে পরিবর্তন ঘটে। যেমন রিউম্যাটয়েড, পেরিফেরাল স্নায়ুরোগ, ক্যান্সার এবং ইডিওপ্যাথিক কারণে দীর্ঘ দিনের ব্যাথা হতে পারে। আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করব কোমরের ব্যাথা সারানোর সহজ উপায়।
কোমরের ব্যথা কেন হয়
কোমর ব্যথার অন্যতম প্রধান কারণ কর্মস্থলে সঠিক ভাবে বসে কাজ না করা। সব থেকে আরেকটি বিশেষ কারণ বসার চেয়ারের কাঠামোগত ক্রটি থাকায় কোমরের ব্যথা হয়। পুরুষের তুলনায় নারীদের পিঠ ও কোমর ব্যথায় বেশি ভোগতে দেখা যায়। যে কোন বয়সের মানুষের এ ধরনের কোমর ব্যথা হতে পারে। এ ধরনের ব্যথায় শরীরচর্চা ও ব্যায়াম খুব ভালো কাজ করে। এছাড়া ব্যথা না চোখ ওষুধ খেতে পারেন, তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকে পরামর্শ নিতে হবে।
কোমর ব্যথা শরীরের মাংসপেশির ফিটনেস কমে যাওয়া, শারীরিকভাবে কর্মক্ষম না হওয়া, বয়স বেড়ে যাওয়া ওজনের সাথে সম্পর্কযুক্ত। তবে সাধারণত দেখা যায় মেরুদন্ডের মাংসপেশী বা লিগামেন্ট স্ট্রেচ, মচকানো বা আংশিক ছিড়ে যাওয়া, ডিস্ক ফেটে জেলে বের হয়ে স্নায়ু না নার্ভকে চাপ দেয়া এবং মেরুদন্ডের কোষেরুকার অবস্থা পরিবর্তন কারনে কোমর ব্যথা হয়ে থাকে। নিচে অনুরূপ ভাবে কোমর ব্যথার কারণ গুলো নিম্নলিখিত করা হলোঃ-
- দীর্ঘক্ষন চিয়ারে একই ভঙ্গিতে বসে একটানা কাজ করার ফলে পিঠ ও কোমরের ব্যথা হতে পারে।
- গর্ভকালে অধিকাংশ নারীরই পিঠ ও কোমর ব্যথা হয়ে থাকে। অনেকের ক্ষেত্রে এ ব্যথা পরবর্তী সময়ে সমস্যা দীর্ঘ হয়। গর্ভাবস্থায় শরীরের ওজন বাড়ে ও ভারী হয়। তাই বেশি ও সন্ধির অপুর চাপ বাড়ে, ফলে কোমরের ব্যথা হয়।
- আবার অনেক সময় আপনি বেশি সময় ধরে শুয়ে থেকে বই পড়লে বা মোবাইল ব্যবহার করলে কোমরের ব্যথা হতে পারে।
- এছাড়াও আপনি যদি বেশি সময় ধরে এক কাত হয়ে শুয়ে থাকেন, তাহলে কোমরের ব্যথা হতে পারে।
- আপনি দীর্ঘক্ষণ ধরে গাড়ি চালান তাহলে কোমরের ব্যথা হতে পারে।
- আবার কখনো কখনো বাইক চালানোর সময় আপনি সামনের দিকে ঝুঁকে বেশিক্ষণ গাড়ি চালান, তাহলে কোমরের ব্যাথা হতে পারে।
- অস্টিওপরোসিস রোগের কারণে পিঠ ও কোমর ব্যাথা হতে পারে।
- আপনার যদি সাধারণ থেকে অতিরিক্ত ওজনে ভারী হয়ে থাকে, তাহলে কোমরের ব্যথা মাঝে মাঝে দেখা দিতে পারে।
- অফিস বা বাসা বাড়িতে দীর্ঘক্ষণে কয় ভঙ্গিতে বসে কাজ করলে কোমরের ব্যথা হতে পারে।
- এছাড়াও দীর্ঘক্ষন কম্পিউটারের সামনে বসে থাকলে কোমরের ব্যথা হতে পারে।
- আপনি যদি বসার চেয়ারে ঠিক ঠাক ভাবে না বসে সামনের-পিছনে বারবার হয়ে বসেন তাহলে কোমরে ব্যথা হতে পারে।
- অনেক সময় ধরে ড্রাইভিং করার কারণে এবং ড্রাইভিং সিটে বসে সামনের দিকে অনেক সময় ঝুঁকে থাকার কারণে কোমরের ব্যথা হয়ে থাকে।
- ভারী জিনিস বহন করার অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে ভুল ভাবে বহন করলে কোমরের ব্যথা হতে পারে।
- সুষম খাবার না খাওয়ার ফলে পুষ্টির অভাবে অনেক সময় কোমর ব্যথা দেখা দেয়।
- মেয়েদের মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে কোমর ব্যথা হয়। তবে এটা সবার ক্ষেত্রে এমনটা হয় না।
- আমরা এখন অনেক বেশি প্রযুক্তি নির্ভর। নানা ধরনের ডিভাইস ও গ্যাজেটের সঙ্গে আমাদের দৈনন্দিন কাটছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের একটানা ক্লাস করতে হয় এবং অনেকে অফিসের কাজ ল্যাপটপ বা মোবাইলে করেন। এর জন্য অনেকে নতুন করে কোমর ব্যথা আক্রান্ত হচ্ছে।
অল্প বয়সে কোমর ব্যাথার কারন
বেশিরভাগ কোমর ব্যাথারই প্রকৃত কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। প্রয়োজনে ওষুধ আর ব্যায়ামের মাধ্যমে কোমর ব্যথা থেকে আমরা সুস্থ হয়ে যায়। কোন ব্যক্তি যদি দীর্ঘ সময় একটানা বৈশাখ কাজ করে, তাহলে মেরুদণ্ডের সামনের দিকের মাংসপেশির সংকুচিত এবং পিছনের দিকে মাংসপেশী প্রসারিত হয়ে যায়। এ কারণে দেহের পেশির ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়। তখন মেরুদন্ডের মাঝে থাকা বৃত্তের উপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয় এই চাপ থেকে ধীরে ধীরে প্রচন্ড বাধার সৃষ্টি হয়।
যদি অতিরিক্ত এক জায়গায় বসে কাজ করার ফলে কোমরের ব্যথা হয়ে থাকে তাহলে তা ২/৪ মাসের মধ্যে সেরে যাবে যদি আপনি সঠিক নিয়ম মেনে চলেন। আর যদি তারপর না থাকে তাহলে বুঝতে হবে এটি বিশেষ কোনো বড় রোগের সম্পর্কে। যদি এই সমস্যা হয় তাহলে আরো বেশি জটিল হয়ে যায়। বয়স বাড়লে কোমরের ব্যথা নানা কারণে হতে পারে কিন্তু অল্প বয়সে কোমর ব্যাথা করলে সেটাকে সার্বিক মনে করা ঠিক নয়। যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা নিতে হবে, তা না হলে পরবর্তীতে এটি বড় কোনো রূপ নিবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অল্প বয়সে কোমর ব্যথার সমস্যা কে বলা হয়েছে অ্যাংকাইলোজিং স্পনডাইলাইটিস। এটি এমন একটি রোগ যাতে আপনি কোন বয়সেই শিকার হবেন। অল্প বয়সে এই বিপদের মাত্রা আরও বেড়ে যাবে, তখনই অসুখের কবলে সবচেয়ে বেশি পরেন। অল্প বয়সে এই রোগ শরীরে বাসা বাঁধলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
সাধারণত ২০-৩০ বছর বয়সীরা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হন। এই রোগে আক্রান্ত হলে কিছু উপসর্গ দেখা দেয় তা হচ্ছে কোমরের সাথে সাথে হাত পায়ের রগ, গিরা, শিরা সবকিছু ব্যাথা করে। এছাড়াও এটি এমন একটি রোগ একবার হলে সম্পূর্ণভাবে ভালো করা সম্ভব হয় না।
কোমরের ব্যাথা সারানোর সহজ ঘরোয়া উপায়
সেঁক দিন
যেখানে কোমরের ব্যথা সেখানে সেঁক দিলে যন্ত্রণা থেকে অনেকটা মুক্তি পাওয়া যায়। আবার সেই জায়গায় সেঁক দেওয়ার সময় বিভিন্ন ধরনের মরণ ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে করে ব্যথা করা জায়গাটা উপশম হয়।
আদা
প্রতিদিন নিয়ম মেনে আদা খেলে কোমরের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। আদাতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। এই পটাশিয়ামের অভাবের ফলে নার্ভের সমস্যা দেখা দেয়।
রসুন ব্যবহার
কিছুটা রসুনের পেস্ট নিয়ে প্রায় ৩০ মিনিট ধরে কোমরে মালিশ করুন। এরপর ওই স্থানটি সামান্য গরম পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন। এ ছাড়া, ৩-৪ কোয়া রসুনের সেবনও খুব কার্যকরী। সবচেয়ে ভালো হয় রসুনের পেস্ট করে মালিশ করা।
হলুদ
কোমরের ব্যথা কমাতে হলুদ বেশ উপকারী। দুধের সঙ্গে নিয়ম করে হলুদ খেলে কোমরের ব্যথা অনেকটাই কমতে পারে।
মেথি বীজ
কোমরে ব্যথার জন্য মেথির ব্যবহার অপরিহার্য। গুড়াঁ দুধের সঙ্গে মেথি বীজের মিশ্রণ তৈরি করে ব্যথার জায়গায় ম্যাসাজ করলে উপকার পাবেন।
লেবুর শরবত
লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। যা শরীরের ব্যথা ও যন্ত্রণা কমাতে অনেক বেশি ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন সি যন্ত্রণা উপশমে খুবই কার্যকারী। তাই কোমর ব্যথা কমাতে লেবুর শরবত খেতে পারে।
অ্যালোভেরা
আপনার যদি অতিরিক্ত কোমর ব্যথা হয়ে থাকে, তাহলে অ্যালোভেরা শরবত খেতে পারেন। প্রতিদিন নিয়ম করে অ্যালোভেরা শরবত খেলে কোমরের ব্যথা থেকে মুক্তি মিলতে পারে।
ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম জাতীয় খাদ্য
কোমরব্যথার সময় আমাদের সুষম খাদ্য খেতে হবে। কারণে এ সময়টাই শরীরে পুষ্টি পরিপূর্ণ থাকতে হবে। প্রতিদিন নিয়ম করে দুধ, ঘি, পনির, ফল, শাকসবজি, বাদাম ইত্যাদি খেলে কোমরের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। আর নিয়মিত শরীরচর্চা করতে ভুলবেন না।
তেল মালিশ
কোমর ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে ইউক্যালিপটাস তেলের ব্যবহার খুবই উপকারী। এক্ষেত্রে ১ বালতি হালকা গরম জল নিতে হবে। এবার এই জলে কয়েক ফোঁটা ইউক্যালিপটাস এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিয়ে এই জল দিয়ে স্নান করতে হবে। এতে পিঠের ব্যথাও কমবে। এর পাশাপাশি শরীরের স্নায়ুতেও বেশ আরাম অনুভব হবে।
ম্যাসাজ
অনেক রোগী রয়েছে যাদের হিট থেরাপি বা মাসাজ করলে আরাম পেয়ে থাকে। প্রতিদিন সকালে পিঠ এবং কোমরে সরিষার তেল দিয়ে মালিশ করলে যন্ত্রণা কমে যাবে। তবে মালিশের পর অবশ্যই সামান্য গরম পানি দিয়ে গোসল করতে হবে। এটি নিয়মিত করা হলে পিঠের ব্যথা থেকে মুক্তি মিলতে পারে।
কোমরের ব্যথা কমানোর ট্যাবলেট
কোমরের ব্যথা কমানোর জন্য ঘরোয়া চিকিৎসার থেকে ট্যাবলেট খেলে তাড়াতাড়ি সুস্থ হওয়া যায়। কোমরের ব্যথা কমানোর জন্য অনেক গুলো ট্যাবলেট রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে যেসব ট্যাবলেট বেশি উপকারী সেগুলোর নাম নিচে দেওয়া হলঃ-
- Naprox (500mg) Tablet
- Napro (500mg) Tablet
- Napro A (500mg) Tablet
- Zerodol th 4 Tablet
- Pan (40mg) Tablet
- Gabapax NT (100mg) Tablet
- Hi-Cobal Tablet
- Diproxen (500mg) Tablet
- Sonap (500mg) Tablet
- Ecless (500mg) Tablet
- Napryn (500mg) Tablet
- Xenapro (500mg) Tablet
- Nuprafen (500mg) Tablet
- Naspro (500mg) Tablet
- Voveran Injection
- Rantac (50mg) Injection
কোমরের ব্যথা বা পিঠের ব্যথা দেখা দিলে ডাক্তাররা এই সকল ওষুধ প্রদান করে যা অবশ্যই অনেক বেশি কার্যকরী। তবে সতর্কবার্তা, আপনারা এ ওষুধের নাম দেখে খাবেন না। ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন তারপর যেটা ভালো হয় সেটা খাওয়া উচিত।
কোমরের ব্যথা কমানোর উপায় ব্যায়াম
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের কোমরও পিঠের ব্যাথা ও বাড়তে থাকে। বসে কাজ করলে কোমর ব্যথার সমস্যাটি দেখা দেয়। এই ব্যথা প্রধান কারণ হচ্ছে মেরুদন্ড সোজা না রেখে বসে থাকা। কোমর ব্যথা কমানোর সহজ উপায় ব্যায়াম করা। এতে কোমর ব্যথা ভালো হবে এবং শরীরও ভালো থাকবে। কি কি ব্যায়াম করলে কোমর ও পিঠ ব্যথা ভালো হবে আলোচনা করা হলোঃ-
১. পার্শিয়াল স্টমাক ক্রাঞ্চেস
অন্যতম একটি ক্লাসিক শক্তি প্রদানকারী এবং ব্যথা নিরাময়কারী একটি ওয়ার্কআউট বলা হয়েছে এই ক্রাঞ্চেসকে। এ ব্যায়ামটি আমাদের শরীর ও কোমর ব্যথায় যথেষ্ট ভূমিকা রাখ। পার্শিয়াল স্টমাক ক্রাঞ্চেস একই সাথে আমাদের পিঠের ব্যথাভাব এবং পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করে। এর জন্য মেঝেতে সোজা হয়ে শুয়ে হাঁটু ভাঁজ করে নিতে হবে।
দুই হাত মাথার পেছনে রেখে ধীরে কাঁধ উঁচু করে তুলতে হবে মেঝে থেকে। এই অবস্থায় কিছুক্ষণ থেকে শ্বাস ছেড়ে কাঁধ নামিয়ে নিতে হবে মেঝেতে। একই নিয়ম ৮-১২ বার পুনরাবৃত্তি করতে হবে।
২. ওয়াল সিটস
পিঠ ও কোমরের ব্যথা কমাতে ওয়াল সিটস খুবই দারুণ একটি ওয়ার্কআউট। কোন চেয়ার কিংবা টুলে বসা নয়, দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে বসার ভঙ্গি করাকে বলা হচ্ছে ওয়াল সিটস। এর জন্য দেয়াল বরাবরা পিঠ ঠেকিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। এবারে ধীরে হাঁটু ভাঁজ করে দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে রাখা অবস্থাতেই বসার মত ভঙ্গি করতে হবে।
খেয়াল রাখতে হবে, দেয়ালের সাথে পিঠ ঠেকিয়ে রাখতে হবে, পিঠ সরানো যাবে না। এভাবে ১০ সেকেন্ড থেকে পুনরায় সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে রাখা অবস্থায়। এরপর আবার বসার ভঙ্গি করতে হবে। এভাবে ১০-১২ বার পুনরাবৃত্তি করতে হবে।
৩. প্রেস-আপ ব্যাক এক্সটেনশন
এই এক্সারসাইজটি প্রায় সকল বয়সীদের জন্যেই সহজ হয় বলে বেশ জনপ্রিয়। এর জন্য মেঝেতে উপুড় হয়ে শুয়ে পরতে হবে এবং দুই কনুইয়ের সাহায্যে ধীরে ধীরে কাঁধ উপরের দিকে ওঠাতে হবে। এতে করে শরীরের উপরের অংশ উপরের দিকে থাকলেও পেট থেকে নিচের অংশ মেঝেতে লেগে থাকবে। এ অবস্থায় যতটা সম্ভব শরীরকে বাঁকাতে হবে উপরের অংশে। এভাবে ১০-১২ সেকেন্ড থাকার পর ধীরে আবার সোজা হয়ে শুয়ে পড়তে হবে এবং ১০-১২ সেকেন্ড রেস্টের পর পুনরায় একই নিয়মের পুনরাবৃত্তি করতে হবে।
৪. ব্রিজপোজ
আমরা যারা যোগাসন করি তারা কম বেশি সবাই ব্রিসপোজ সম্পর্কে জানি।উপরের ছবি অনুসারে প্রথমে মেঝেতে সোজা হয়ে শুয়ে পড়ুন। তারপর হাঁটু বাঁকিয়ে পা দুইটা মেঝেতে খাড়া করে কোমর উপরে তুলুন হাত দুটো মেঝেতে সমতল অবস্থায় রাখুন। এ সময় শরীরের সম্পূর্ণ ভার দুই পায়ের গোড়ালি এবং কাঁধের উপর ভর করবে। সময় শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক অবস্থায় রাখবেন। এই ব্যায়ামটি ১৫ থেকে ২০ রিপিট করবেন।
উপকারিতা
কোমর ব্যাথা সারাতে এই পোজ বিশেষ উপকারী। এই ব্যায়ামের ফলে গ্লুটিয়াস ম্যাক্সিমাস নামক পেশী শক্তিশালী হয় যা কোমর ব্যাথা সারাতে সাহায্য করে।
লেখকের মতামত
প্রিয় পাঠক, কোমর ব্যথা আমাদের প্রায় সবারই হয়ে থাকে, এটা একটা জটিল সমস্যা। কিন্তু আমরা এই কোমর ব্যথা কে তেমন ভাবে গুরুত্ব দেয় না। কোমর ব্যথা হলে আমাদের সঠিক ভাবে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। আজকের আর্টিকেলটি আপনার ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ!
ব্রোক্লিন৬৯ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url